শেখ হাসিনা সরকারের প্রথম ১০০ দিনের পরিকল্পনার মধ্যে যে ৫টি বিষয় অগ্রাধিকার পাচ্ছে

শেখ হাসিনা সরকারের প্রথম ১০০ দিনের পরিকল্পনার মধ্যে যে ৫টি বিষয় অগ্রাধিকার পাচ্ছে

এবার পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হয়ে শেখ হাসিনা তাঁর সরকারের প্রথম ১০০ দিনের পরিকল্পনায় ৫টি বিষয়কে প্রথম সর্বাধিক গুরুত্ব ‍ দিয়ে কাজ করবেন বলে  বিশ্বস্ত সূত্রে জানা  গেছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রথম লক্ষ্য হল দেশের স্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করা এবং জনমনে স্বস্তি আনা। এই লক্ষ্যে তিনি পাঁচটি অগ্রাধিকার চূড়ান্ত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী এই পাঁচটি অগ্রাধিকার বাস্তবায়নের জন্য বিশেষ টাস্ক ফোর্স গঠন করবে বলেও একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তৃতায় এই অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো ফুটে উঠেছে। 

সুশাসন প্রতিষ্ঠা: আওয়ামী লীগের লক্ষ্য হলো সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা। এটি সরকারের অগ্রাধিকারের একটি। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যে মানবাধিকার বা অন্যান্য ইস্যুগুলো আসছে যে ইস্যুগুলোকে মোকাবিলা করে দেশে একটি অনুকরণীয় সরকার কাঠামো প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে কাজ করবেন শেখ হাসিনা।
 

দুর্নীতি প্রতিরোধ: দুর্নীতি বিগত পাঁচ বছরে একটি বড় ইস্যু ছিল। এই বার নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহিষ্ণুতা ঘোষণা করেছে। সেই ধারায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে একগুচ্ছ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন প্রধানমন্ত্রী এমনটি মনে করছেন অনেকে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যে সমস্ত পদক্ষেপগুলো তিনি গ্রহণ করবেন তার রূপরেখা খুব শীঘ্রই পাওয়া গেছে।

অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সামাল দেওয়া: দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী একগুচ্ছ উদ্যোগ গ্রহণ করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষ করে নতুন অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে ব্যাংকিং সেক্টর যেন ঘুরে দাঁড়ায়, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ যেন বাড়ে এবং আর্থিক খাতে বিশৃঙ্খলা গুলো যেন দূর হয় সেজন্য বিভিন্ন রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো মনে করছে যে, প্রধানমন্ত্রী এবার দেশের অর্থনীতিকে আলাদা ভাবে গুরুত্ব দেবেন। 
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ: আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম চ্যালেঞ্জ হল দ্রব্যমূল্য রোধ করা। দ্রব্যমূল্য সহনীয় মাত্রায় নিয়ে আসার জন্য প্রধানমন্ত্রী সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করবেন বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। সামনে রমজান শুরু হচ্ছে। রমজানে যেন মূল্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায় এবং এখন যে পরিস্থিতি আছে সেটি যেন সহনীয় মাত্রায় আসে সেজন্য একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। এখন পর্যন্ত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকায় ফেরার পর পর্যায়ক্রমে তিনি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সেখানে তিনি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও বৈঠক করবেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এখন পর্যন্ত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে কোন পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী দেওয়া হয়নি। যদি শেষ পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী না দেওয়া হয় তাহলে প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব উদ্যোগেই একটি টাস্কফোর্সের মাধ্যমে এই দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ গ্রহণ করবেন বলে বিভিন্ন মহল মনে করছে। 

খাদ্য নিরাপত্তা: নির্বাচনের আগেই প্রধানমন্ত্রী খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছিলেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতির কারণে ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি হলে সব পণ্যের দামই জ্যামিতিক হারে বাড়তে পারে এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে। এরকম পরিস্থিতিতে নিজের দেশের উৎপাদিত পণ্য যেন নিশ্চিত করা যায় এবং খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে হয় করা যায় সেটির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী আলাদা গুরুত্ব দেবেন।