গরমে বাড়ে আইসক্রিমের চাহিদা
ছোটবেলায় আইসক্রিমের গাড়ি ঘিরে আমাদের জটলা লেগেই থাকতো। এক টাকা, দুই টাকায় সুস্বাদু চিনি ও নারিকেলের তৈরি আইসক্রিম পেয়ে আনন্দের সীমা ছিল না। শৈশব-কৈশোরের এমন স্মৃতি চোখের সামনে এখনো ভেসে ওঠে।
সময়ের পরিক্রমায় লোভনীয় সেই আইসক্রিমের স্বাদে এসেছে বৈচিত্র্য ও নতুনত্ব। মিলছে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি ব্র্যান্ডের বাহারি রং ও স্বাদের নানা আইসক্রিম। ছেলে-বুড়ো সবার কাছেই আছে এর চাহিদা।
বিশ্বের অন্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বড় হচ্ছে আইসক্রিমের বাজার। তীব্র গরমে আইসক্রিমের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। গ্রীষ্মকালে খোলাবাজারে বিক্রি হওয়া আইসক্রিমের একটা বড় অংশ উৎপাদন করেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। নতুন প্রযুক্তি আর যন্ত্রপাতির মাধ্যমে উৎপাদনে নতুন গতি ও বৈচিত্র্য আনতে পারা, গ্রামগঞ্জে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাওয়ার ফলে সংরক্ষণ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় আইসক্রিমের বাজার প্রসার হচ্ছে।
করোনাকালে ঝুঁকি বাড়ার আশঙ্কায় আইসক্রিমের চাহিদা কিছুটা কমে যায়। তখন নেতিবাচক প্রভাব পড়লেও পরে ঘুরে দাঁড়ায় আইসক্রিমের বাজার। সারাদেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে ছোট-বড় অসংখ্য আইসক্রিম উৎপাদক প্রতিষ্ঠান। বড় শহর থেকে শুরু করে মফস্বল আর গ্রামাঞ্চলেও তৈরি হচ্ছে আইসক্রিম।
একটি জরিপ থেকে জানা যায়, দেশে বছরে ৬ কোটি লিটার আইসক্রিমের চাহিদা আছে। আইসক্রিমপ্রেমীদের জন্য রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠছে আইসক্রিম পার্লার। গড়ে উঠেছে বিশ্ববিখ্যাত ব্র্যান্ডের পার্লারও। বনানী, ধানমন্ডি ও গুলশানে কয়েকটি পার্লার আছে। এসব জনপ্রিয় পার্লারে পাওয়া যাচ্ছে নানা ফ্লেভারের আইসক্রিম।
সাধারণত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে, দর্শনীয় স্থান, বিনোদন পার্ক, পর্যটন স্পট, বিভিন্ন মেলা-প্রদর্শনীর জায়গায় আইসক্রিম বিক্রি বেশি হয়। আর উৎসবের দিনগুলো আইসক্রিম বিক্রেতাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পয়লা বৈশাখের দিনেই তিন মাসের সমান বিক্রি হয় অনেকের। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ডেজার্ট হিসেবেও আইসক্রিমের ব্যবহার বাড়ছে।
আইসক্রিমের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত ফ্রিজ বা শীতাতপের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হয়। ফ্রিজিংয়ের বিষয়টি সঠিকভাবে করা না গেলে আইসক্রিম বাজারজাত করা যায় না। অনেক সময় রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা ট্রাফিক জামে পড়ে থাকতে হয় পণ্যবাহী গাড়িগুলোকে। এ ক্ষেত্রে আইসক্রিম গলে যায়। লোকসানও গুনতে হয়। তাই ফ্রিজিং আইসক্রিমের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক: শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যমকর্মী।