যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম ফেডারেল মুসলিম বিচারক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নুসরাত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম মুসলিম নারী ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নুসরাত জাহান চৌধুরীকে ফেডারেল বিচারক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিউইয়র্কে ফেডারেল বিচারক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন তিনি। এ নিয়োগ মার্কিন মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। আল-জাজিরা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) নুসরাত জাহানের নিয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করার পক্ষে ভোট দিয়েছে। নিউইয়র্কের ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্টের জেলা আদালতের ফেডারেল বিচারক হিসাবে দায়িত্ব পালন করবেন নুসরাত। এ নিয়োগকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অধিকার ও মুসলিম অ্যাডভোকেসি গ্রুপগুলো।
নুসরাত চৌধুরীকে ফেডারেল বেঞ্চে নিয়োগে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ভোট অনেক কারণেই ঐতিহাসিক। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গ্রুপ মুসলিম অ্যাডভোকেসির নির্বাহী পরিচালক ওমর ফারাহ এক সংবাদ বিবৃতিতে বলেন, আমাদের আইনি ব্যবস্থায় সব মানুষের সঙ্গে যেন ন্যায্য আচরণ করা হয়, তা নিশ্চিত করতে নুসরাত চৌধুরী নিজের কর্মজীবন উৎসর্গ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে বিদ্যমান ন্যায়বিচারের প্রতিবন্ধকতার বিষয়ে নুসরাত চৌধুরী ফেডারেল বিচারক হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেবেন। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে বাইডেন প্রশাসন নুসরাতকে মনোনীত করেন এবং বেশ কয়েকটি সামাজিক ন্যায়বিচার, নাগরিক স্বাধীনতা এবং মুসলিম অধিকার গোষ্ঠী তার মনোনয়নকে সমর্থন করে।
আইনজীবীরা বলেছেন, নুররাতের এই স্বীকৃতি মার্কিন আইন ব্যবস্থায় মুসলিম প্রতিনিধিত্বের জন্য একটি মাইলফলক। কখনো কখনো দেশটির মুসলিম সম্প্রদায়কে বৈষম্য এবং নাগরিক স্বাধীনতা লঙ্ঘনের শিকার হতে দেখা যায়।
নুসরাত চৌধুরী এর আগে আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের (এসিএলইউ) ইলিনয় শাখার আইনি পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এটি একটি বিশিষ্ট মার্কিন নাগরিক স্বাধীনতা সংস্থা, যেখানে তিনি ফৌজদারি বিচার, পুলিশিং এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর সরকারি নজরদারির মতো বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করেছেন।
এসিএলইউ'র নির্বাহী পরিচালক অ্যান্থনি ডি রোমেরো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, নুসরাত চৌধুরী একজন নাগরিক অধিকার-সোচ্চার আইনজীবী। তিনি আমাদের দেশের সবার জন্য সমান ন্যায়বিচারে অগ্রগতি নিয়ে অসাধারণ কাজের স্বাক্ষর রেখেছেন।
সিনেট জুডিশিয়ারি কমিটির সিনেটর ডিক ডারবিনকে লেখা একটি চিঠিতে নুসরাতের মনোনয়নকে সমর্থনকারী বেশ কয়েকটি অ্যাডভোকেসি গ্রুপ উল্লেখ করেছে, দেশের বৃহত্তম মুসলিম এবং বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের আবাসস্থল নিউইয়র্কে নুসরাত চৌধুরী দায়িত্ব পালন করবেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, নুসরাতের যোগদান আদালতে ব্যক্তিগত ও পেশাগত বৈচিত্র্য যুক্ত করবে। এটি বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা বাড়াতে এবং সমান ন্যায়বিচার প্রদানের জন্য (সকল সম্প্রদায়কে), আদালতকে আরও ভালোভাবে সজ্জিত করার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
ডেমোক্র্যাটিক সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা চাক শুমার নুসরাত চৌধুরীর মনোনয়ন নিশ্চিতে সহায়তা করেছিলেন। তিনি বলেন, সিনেট ডেমোক্র্যাটরা ফেডারেল বেঞ্চে ২১ জন এশিয়ান আমেরিকান বিচারককে অনুমোদন দিয়েছে।