স্বয়ংক্রিয়ভাবে বৃটিশরা ইইউ’র নাগরিকের অধিকার পাবেন না
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের শীর্ষ আদালত নিশ্চিত করেছে, বৃটিশ নাগরিকরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) নাগরিক হিসেবে অধিকার পাবেন না। বৃহস্পতিবার ১৫ই জুন এ রায় দিয়েছে আদালত। দীর্ঘদিন ধরে বৃটিশরা এ অধিকার ভোগ করে আসছিলেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ইউর্যাএকটিভ।
তারা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নাগরিক হিসেবে মর্যাদা অর্জন করেছিলেন। কিন্তু ব্রেক্সিটের ফলে সেই অধিকার তুলে নেয়া হয়েছে। এ জন্য বৃটেনে এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কিছু রাষ্ট্রে বসবাসকারী বৃটিশ নাগরিকরা এর বিরুদ্ধে আপিল করেন। তারা দাবি করেন ‘উইড্রয়াল এগ্রিমেন্ট’ বা ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদনের জন্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ২০২০ সালের জানুয়ারিতে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, আদালত যেন তা পুরোপুরি বা অংশবিশেষ বাতিল করে। এর শুনানিতে এর আগে জেনারেল কোর্ট যে রায় দিয়েছিল তা বহাল রাখে লুক্সেমবার্গভিত্তিক ইউরোপিয়ান কোর্ট অব জাস্টিস। কোর্ট তার রায়ে জানায়, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে নাগরিকের মর্যাদা এবং তার প্রেক্ষিতে তাদের অধিকার বিষয়ক মর্যাদা ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বৃটেনের প্রত্যাহারের সার্বভৌম সিদ্ধান্তের কারণে স্বয়ংক্রিয় পরিণতি। এটা কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত বা উইড্র এগ্রিমেন্টের জন্য হয়নি।
আদালতের এই রায় বিস্ময়কর নয়।
বরং তা নিশ্চিত করেছে, কোনো ব্যক্তি তৃতীয় একটি দেশ থেকে অথবা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সাবেক একটি সদস্য দেশ থেকে এই ইউনিয়নের নাগরিকত্ব তখনই পেতে পারেন, যদি তিনি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কোনো সদস্য দেশের নাগরিক হন। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে এখনো বসবাস করছে এবং সেখানে কাজ করছে এবং একইভাবে যদি কোনো ইউরোপিয়ান বৃটেনে বসবাস করেন, কাজ করেন, তাহলে তা হলে ব্রেক্সিট প্রক্রিয়ার একটি সবচেয়ে সূূূক্ষ্ম বিষয়।
বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে বসতি স্থাপন করেছেন প্রায় ১৩ লাখ বৃটিশ। তারা ইইউয়ের কোনো সদস্য দেশে আবাসিক মর্যাদা অর্জন করেছেন। এ অবস্থায় আগে থেকেই যেসব বৃটিশ নাগরিক ইইউতে বসবাস করছেন, বৃটিশ আইন প্রণেতারা বলছেন, তারা আবাসিক স্কিমে মারাত্মক সমস্যায় পড়বেন।
এ বছরের শুরুর দিকে অভ্যন্তরীণ আইন পরিবর্তনের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করে ডেনমার্ক সরকার। এর উদ্দেশ্য সেখানে বসবাসকারী বৃটিশ নাগরিক, যারা আবাসিক মর্যাদার জন্য দেরিতে আবেদন করেছেন, তাদেরকে দেশে ফেরত পাঠানোয় ঝামেলা থেকে মুক্ত হওয়া। একই রকম সমস্যা আছে সুইডেনেও। তারা কমপক্ষে ১০০০ বৃটিশ নাগরিককে ফেরত পাঠিয়েছে। অন্য রাষ্ট্রগুলোই একই রকম পদক্ষেপ নিচ্ছে। মে মাসে বৃটিশ পার্লামেন্টের ইইউ কমিটি বৃটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্রেভারম্যানের কাছে উদ্বেগ তুলে ধরে।
২০২১ সাল থেকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে বসবাসকারী বৃটিশ নাগরিকদের সমর্থন করার মতো কোনো অফিসিয়াল সংগঠন নেই। এক্ষেত্রে ইন্ডিপেন্ডেন্ট মনিটরিং অথরিটির সমতুল্য কিছু নেই, যা বৃটেন বসবাসকারী ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নাগরিকদের অধিকার সুরক্ষিত রাখে। নাগরিকদের অধিকার বিষয়ক ইইউ-ইউকে কমিটির সর্বশেষ মিটিংয়ে বৃটিশ মন্ত্রীরা দাবি করেন, যেসব বৃটিশ নাগরিক স্থায়ী আবাসনের জন্য আবেদন করেননি তারা সুবিধা ও সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতার মুখে পড়েছেন।