মস্কোয় বৈঠকে তুরস্ক-সিরিয়া-রাশিয়া-ইরান

মস্কোয় বৈঠকে তুরস্ক-সিরিয়া-রাশিয়া-ইরান

তুরস্ক, সিরিয়া, রাশিয়া ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বুধবার মস্কোয় বৈঠক করেছেন। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ শুরুর পর থেকে আঙ্কারা ও দামেস্কের মধ্যে সম্পর্ক পুনর্প্রতিষ্ঠার জন্য এ পর্যন্ত হওয়া সর্বোচ্চ পর্যায়ের বৈঠক এটি।

তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু এক টুইটে বলেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহযোগিতা এবং সিরীয়দের দেশে ফেরার পরিবেশ তৈরিতে একসঙ্গে কাজ করার ওপর তিনি আলোচনায় জোর দিয়েছেন।

সিরিয়ায় ১২ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধে নেটো সদস্যদেশ তুরস্ক সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ বিরোধীদের সমর্থন দিয়েছে। দেশটির উত্তরাঞ্চলে তুর্কি সেনা পাঠিয়েছে। সিরিয়া থেকে যাওয়া ৩৫ লাখের বেশি শরণার্থীকেও আশ্রয় দিয়েছে তুরস্ক।

তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মস্কোর বৈঠকে অন্য যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে তার মধ্যে আছে; সিরিয়ার রাজনৈতিক প্রক্রিয়া সামনে এগিয়ে নেওয়া এবং দেশটির আঞ্চলিক অখণ্ডতার সুরক্ষা।

সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল মেকদাদের উদ্ধৃতি দিয়ে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা জানায়, “আগের কয়েবছরের ফল নেতিবাচক হলেও দামেস্ক এবং আঙ্কারার একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ আছে।”

সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে প্রেসিডেন্ট আসাদের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্রদেশ রাশিয়া। আঙ্কারা ও দামেস্কর বিরোধ মেটাতে উৎসাহ দিয়েছে মস্কো। তবে দামেস্ক সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের শর্ত হিসেবে সিরীয় ভূখণ্ড থেকে তুর্কি সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে।

সিরীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেকদাদ বলেছেন, তুরস্কসহ সব বিদেশি সেনার অবৈধ উপস্থিতির অবসান ঘটানোকেই সিরিয়া অগ্রাধিকার দেয়।

সিরিয়ার কর্মকর্তারা বারবারই বলে আসছেন যে, দামেস্ক এবং আঙ্কারার মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার যে কোনও পদক্ষেপ শুরু হতে পারে কেবল সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থান করা হাজার হাজার তুর্কি সেনা প্রত্যাহারে তুরস্ক রাজি হলে।

কারণ, ওই অঞ্চলে তুরস্কের ব্যাপক সামরিক উপস্থিতি রাশিয়া-নেতৃত্বাধীন সামরিক অভিযানের মধ্য দিয়ে সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত সর্বশেষ ঘাঁটিগুলো আসাদ সরকারের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে আছে।

মেকদাদ বলেন, “এ বিষয়ে অগ্রগতি না হলে আমরা একজায়গাতেই আটকে থাকব এবং আলোচনা বাস্তবিক কোনও ফল বয়ে আনবে না।”

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ইতিবাচক ও গঠনমূলক পরিবেশে আলোচনা হয়েছে। সিরিয়া-তুরস্ক সম্পর্কোন্নয়নের জন্য দেশগুলোর উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের একটি রূপরেখা প্রস্তুত করতে বলা হবে।

এর আগে সিরিয়া ও তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা ডিসেম্বরে মস্কোয় বৈঠক করেছিলেন।