প্রথমবারের মতো ব্রিটেনে “জাতীয় প্রবাসী দিবস” উদযাপন এবং ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান শুরু
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের বাহিরে ব্রিটেনে ‘জাতীয় প্রবাসী দিবস’ উদযাপন উপলক্ষ্যে গত ৩০ ডিসেম্বর ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) চালু করেছে বাংলাদেশ হাই কমিশন, লন্ডন।
এ উপলক্ষে দূতাবাসে এক বিশেষ মতবিনিময় সভায় যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম প্রথমেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সেই সাথে তিনি ব্রিটিশ-বাংলাদেশি প্রবাসীদের সঙ্গে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বন্ধনের কথা স্মরণ করেন এবং সেইসাথে ১৯৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধসহ গত ৫২ বছরে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্রিটিশ-বাংলাদেশি প্রবাসীদের উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
হাইকমিশনার মুনা তাসনিম প্রবাসী-বান্ধব বিভিন্ন জাতীয় নীতিমালা গ্রহণ এবং ৩০ ডিসেম্বরকে ‘জাতীয় প্রবাসী দিবস’ ঘোষণার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
আলোচনা অনুষ্ঠানের পর হাইকমিশনার একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিকের হাতে ই-পাসপোর্ট তুলে দেন। এরপর তিনজন বিশিষ্ট কমিউনিটি ব্যক্তিত্বের এনআইডি আবেদন গ্রহণের মাধ্যমে এনআইডি পাইলট প্রজেক্ট কার্যক্রমের উদ্বোধন করে হাইকমিশনার জানান, আগামী জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারি মাসে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের উপস্থিতিতে লন্ডনে পূর্ণাঙ্গ এনআইডি-সেবা কার্যক্রম চালু করা হবে।
হাইকমিশনার বলেন, প্রবাসী নাগরিকদের সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকারের কল্যাণমূলক নীতিমালা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশনার আলোকে সদা তৎপর রয়েছে। তিনি আরও বলেন, গত পাঁচ বছরে যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের মর্যাদা ও সম্মানের সাথে রেকর্ডসংখ্যক কনস্যুলার এবং ওয়েলফেয়ার সেবা প্রদান করেছে লন্ডনস্ত বাংলাদেশ হাই কমিশন।
হাইকমিশনার আরও বলেন, এনআইডি কার্ডের জন্য বাংলাদেশি জন্ম নিবন্ধন সনদ এবং বাংলাদেশি পাসপোর্ট থাকা বাধ্যতামূলক। প্রবাসীদের মধ্যে যাদের বাংলাদেশি জন্ম-নিবন্ধন সনদ নেই, তারা বাংলাদেশ হাইকমিশন লন্ডনের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আবেদন করলে তাদের শিগগিরই বাংলাদেশের জন্ম-নিবন্ধন সনদ দেওয়া হবে, যার মাধ্যমে তারা বাংলাদেশ হাইকমিশন লন্ডন হতে ই-পাসপোর্ট এবং এনআইডি গ্রহণ করতে পারবেন।
হাইকমিশনার বলেন, ‘গত পাঁচ বছরে যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে রেকর্ডসংখ্যক কনস্যুলার এবং ওয়েলফেয়ার সেবা প্রদান করেছে বাংলাদেশ হাই কমিশন। কোভিড পূর্ববর্তী ২০১৯ এর তুলনায় ২০২৩ সালে ৫৬ শতাংশ বেশি এনবিআর, ২৫ শতাংশ বেশি এমারপি এবং আড়াই হাজারের বেশি ওয়েলফেয়ার সংক্রান্ত সার্ভিস প্রদান করা হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে লন্ডনে থেকে ই-পাসপোর্ট এবং এনআইডি যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের হাতে তুলে দিতে পেরে হা কমিশন গর্বিত বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যুক্ত্যরাজ্য ও আয়ারল্যান্ডে প্রবাসীদের সর্ব ধরনের সহায়তা প্রদান এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের কাজে সম্পৃক্ত করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ হাইকমিশন, সব সময় অঙ্গীকারাবদ্ধ।’
উল্লেখ্য যে, এনআরবি (নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশি) তাঁরাই যাঁরা বিদেশে স্থায়ীভাবে অথবা শিক্ষা বা চাকরির কারণে অস্থায়ীভাবে দেশের বাইরে বাস করেন। ২০১৭ সাল থেকে বেসরকারিভাবে ৩০ ডিসেম্বর এনআরবি ডে উদযাপিত হয়ে আসছে। তবে এ বছর প্রথমবারের মতো সারা বিশ্বে বাংলাদেশের ৮১টি মিশনে একসাথে প্রবাসী দিবস (এনআরবি ডে) উদযাপিত হয়েছে।