মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর হামলায় নিহত ৪০
মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টার হামলায় অন্তত ৪০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকে। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অভ্যুত্থানবিরোধীদের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত দেশটির মধ্যাঞ্চলের একটি শহরে এ হামলা চালিয়েছে জান্তা বাহিনী।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে আল-জাজিরা জানিয়েছে, মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) ইয়াঙ্গুন থেকে প্রায় ১১০ কিলোমিটার দূরবর্তী সাগাইং এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। বাসিন্দারা একটি প্রশাসনিক অফিস উদ্বোধনে জড়ো হওয়ার সময় সেখানে আকাশপথে হামলা চালানো হয়।
খবরে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মানুষের ভিড়ের ওপর প্রথমে যুদ্ধবিমান, এরপর এমআই-৩৫ হেলিকপ্টার দিয়ে হামলা চালানো হয়।
এক উদ্ধারকারী জানিয়েছেন, হামলায় অন্তত ৪০ জন নিহত হয়েছেন। তবে মৃতের সংখ্যা আরও অনেক বাড়তে পারে। কারণ হামলাটি খুবই ভয়াবহ ছিল।
নিহতরা সবাই বেসামরিক নাগরিক। তারা সামরিক বাহিনীর নিশানা হওয়ার মতো কেউ ছিলেন না বলে জানিয়েছেন আল-জাজিরার সংবাদদাতা।
দুই বছর আগে জান্তা বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমারের সাধারণ মানুষের ওপর অন্যতম প্রাণঘাতী সামরিক হামলার ঘটনা এটি।
তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে সামরিক নেতাদের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
মিয়ানমারে সশস্ত্র প্রতিরোধকে দমনে বেসামরিক নাগরিকদের নির্বিচারে হত্যার অভিযোগ রয়েছে জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে। গত মাসে জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং তার সরকারের বিরোধীদের ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে উল্লেখ করে তাদের কঠোরহস্তে মোকাবিলার ঘোষণা দিয়েছেন।
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। কিন্তু তা মেনে নেয়নি দেশটির সাধারণ মানুষ। অভ্যুত্থানের বিরোধিতায় রাস্তা নেমে আসেন তারা। শুরু হয় ব্যাপক সহিংসতা, ধরপাকড়।
জাতিসংঘ মানবাধিকার অফিসের হিসাবে, মিয়ানমার জান্তা সরকারের হাতে এ পর্যন্ত অন্তত দেড় হাজার বিক্ষোভকারী প্রাণ হারিয়েছেন। হামলা-সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা আরও কয়েক হাজার হতে পারে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলায় মিয়ানমারে অন্তত ১১ হাজার ৭৮৭ জনকে আটক করা হয়েছে। বন্দিদশায় মারা গেছেন অন্তত ২৯০ জন। এদের বেশিরভাগেরই মৃত্যুর কারণ ব্যাপক নির্যাতন।
মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতিকে গৃহযুদ্ধ হিসেবে বর্ণনা করেছেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা।